প্রিয় বন্ধুরা, নমস্কার। আমি পীয়ুষ কথা বলছি সনাতন বার্তা থেকে। ধর্মের কারণে যখন নিজ দেশ ত্যাগ করতে হয়, যখন নিজ দেশে শান্তিতে থাকা যায় না—তখন অন্য দেশে আশ্রয় খোঁজাই হয়ে ওঠে শেষ ভরসা। এবার সেই আশ্রয়ের দুয়ার খুলে দিল ভারত। ভারতের Long Term Visa (LTV) কী? বাংলাদেশি হিন্দুরা কীভাবে LTV Visa আবেদন করবেন
ভারতে পাসপোর্ট ছাড়াই বাংলাদেশি হিন্দুদের থাকার সুযোগ
বন্ধুরা, বাংলাদেশী সংখ্যালঘু হিন্দুদের জন্য দারুণ একটা সুখবর দিল ভারত সরকার। এখন থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের ভারতে থাকতে গেলে আর লাগবে না পাসপোর্ট, ভিসা বা অন্য কোনো কাগজপত্র। যা সত্যিই দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে থাকা সংখ্যালঘুদের মনে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে।
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। এমনই একটি নতুন আইন পাশ করেছে ভারত সরকার। হিন্দু, শিখ ও নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকরা যারা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ভারতে প্রবেশ করেছেন, তারা পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়াই ভারতে থাকার সুযোগ পাবেন। তাদের আর কোনো পুলিশী হয়রানি বা শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না।
তবে বলে রাখা ভালো—তারা এখনই ভারতীয় নাগরিকত্ব পাচ্ছেন না। মূলত বাংলাদেশ থেকে যেসব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তারা পাসপোর্ট এবং ভিসা ছাড়াই ভারতে থাকতে পারবেন।
শুধু বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘু নাগরিকরাও এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। গত সোমবার, অর্থাৎ ১লা সেপ্টেম্বর ভারত সরকার একটি নতুন আইন পাশ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে—আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি বা খ্রিস্টান যারা ধর্মীয় নিপীড়ন বা নিপীড়নের আশঙ্কায় ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪-এর মধ্যে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তারা বৈধ ভ্রমণ নথি বা ভিসা ছাড়াই ভারতে থাকতে পারবেন।
আবার যারা বৈধ ভিসা–পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে এসেছিলেন কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তারাও এই সুবিধা ভোগ করবেন। তাদের বিরুদ্ধেও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
সম্প্রতি পাশ হওয়া ২০২৫ সালের ইমিগ্রেশন ও ফরেনার্স অ্যাক্ট-এর অধীনে এই আদেশ কার্যকর হয়েছে। আইনটি ১লা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এতে ২০১৪ সালের পর যারা ভারতে এসেছেন তারাও অনেকটা স্বস্তি পাবেন। এতদিন বৈধ পরিচয় নিয়েও একটা অনিশ্চয়তা ছিল।
যদিও এর আগে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (CAA) অনুযায়ী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে আসা সংখ্যালঘুরা যারা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪-এর আগে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, তারা ভারতীয় নাগরিক হওয়ার যোগ্য ছিলেন বা ভারতে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন।
কিন্তু গত সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া ভারতের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাক্ট-এর নতুন আইনে বলা হয়েছে—যাদের পাসপোর্ট নেই তারাও এখন থেকে আর কোনো শাস্তি বা পুলিশী হয়রানির মুখোমুখি হবেন না।
এটি নিঃসন্দেহে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য এক বড় সুখবর, বিশেষত আমাদের হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য। দীর্ঘদিন ধরে যাদের মনে ভয়ের ছায়া ছিল, তারা এবার শান্তিতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন। এই আইন কার্যকর হওয়ায় সংখ্যালঘুরা এখন ভারতে নিরাপদে থাকতে পারবেন।