ধনতেরাস বা ধন ত্রয়োদশী আজকের হিন্দু বাঙালির কাছে নতুন উৎসব
ধনতেরাস বা ধন ত্রয়োদশী আজকের হিন্দু বাঙালির কাছে নতুন উৎসব। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যায় আলোর উৎসব দীপাবলি। তার আগের ত্রয়োদশী তিথীই ধনতেরাস বা ধন ত্রয়োদশী নামে পরিচিত । ধন ত্রয়োদশী নিয়ে পুরাণে দুটি ভিন্ন ভিন্ন কাহিনী পচলিত রয়েছে। প্রথম কাহিনী- দেবতা আর অসুরের দ্বারা সমুদ্র মন্থনের সময় এই দিনেই অমৃত কলস হাতে উঠে এসেছিলেন দেব চিকিৎসক ধন্বন্তরি। তাঁর নামেই এই দিনের নাম হয় ধন ত্রয়োদশী। অমাবস্যায় ক্ষীরসাগর মন্থনে প্রকট হয়েছিলেন মহালক্ষ্মী। ফলে প্রথম কাহিনী অনুযায়ী, ধন ত্রয়োদশী আসলে সুস্বাস্থ্য, নীরোগ জীবন কামনার দিন। এর সঙ্গে অর্থের কোনও যোগ নেই। সুস্থ নীরোগ শরীরে দীপাবলিতে সোনা–রূপায় বরণ করতে হয় মহালক্ষ্মীকে।
দ্বিতীয় কাহিনী – রাজা হিমার ১৬ বছরের কিশোরপুত্রের কুণ্ডলিতে লেখা ছিল তাঁর বিয়ের চতুর্থ দিনে তাঁর মৃত্যু হবে। পুত্রবধূকে সেকথা জানান রাজা হিমা। স্বামীর মৃত্যু ঠেকাতে বিয়ের রাত থেকে চতুর্থ দিন পর্যন্ত ঘরের দরজা বন্ধ করে দরজার সামনে সব গয়না ছড়িয়ে রেখে ঘর জুড়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেন নববধূ। তারপর রাতভর স্বামীকে গল্প বলে জাগিয়ে রাখেন। ত্রয়োদশীতে যমরাজ সাপের রূপ ধরে ঘরে ঢুকতে গেলে গয়নায় প্রতিফলিত প্রদীপের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায়। এরপর সারা রাত গয়নার স্তুপের উপর বসে গল্প শুনতে শুনতে ভোর হয়ে যায় । ভোর হয়ে যাওয়াই কাজে ব্যর্থ হয়ে চলে যেতে হয় মৃত্যুর দেবতাকে। রাত কেটে যাওয়ায় কেটে যায় কুণ্ডলির দোষও। রাজা হিমার পুত্রবধূর সাহসিকতার সম্মান হিসেবে ওই দিনটি ধন ত্রয়োদশী এবং তার পরের দিন নরক চতুর্দশী বা যমদীপদান নামে পরিচিত। এই দিন পরিবারের মঙ্গল কামনা করে যমরাজের উদ্দেশ্যে প্রদীপ জ্বালানো হয়।